বায়োকেমিক বার টি ঔষধের সংক্ষিপ্ত পরিচয় বর্ণনা দেওয়া হল
বায়োকেমিক ঔষধ গ্রহণ করলে দেহ রোগমুক্ত হয় । এই ঔষধগুলো সাধারণত পাউডার অথবা ট্যাবলেট রূপে পাওয়া যায় । শক্তির মাত্রা ৩এক্স,৬এক্স,১২এক্স ইত্যাদি ।
ট্যবলেটগুলি সাধারণত ৩/৪টি করে দিনে ৩/৪ বার খেতে হয় । গরম পানিতে গুলে খেলে এর ক্রিয়া ভালভাবে হয় । সম্ভব না হলে চিবিয়েও খাওয়া যায় ।
আবার এই ১২টি ঔষিই হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে শক্তিকৃত করে হোমিওপ্যাথি মতে (সদৃশ্য বিধান) রোগীর দেহে প্রয়োগ করা হয় । সেক্ষেত্রে শক্তির মাত্রা ৩/৬/৩০/২০০/১০০০/১০,০০০/১০০,০০০ এই রকম ।
বায়োকেমিক বার টি ঔষধের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
আমরা এই মহা মুল্যবান ১২টি ঔষধের ক্রিয়া আলোচনা করব ।
১/ ক্যালকেরিয়া ফ্লোর
পরিচয় : ক্যালসিয়াম ফ্লোরাইড,ফ্লোরম্পার ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – চোখের ছানি, কোমর ব্যথা, মচকা ব্যথা, স্তনে গুটি, দাঁত উঠতে দেরি হওয়া, দাঁতের ক্ষয় ও প্রদাহ, চামড়া ফাটা, সহজেই রক্তপাত, বংশগত সিফিলিস,এ্যাডিনয়েডস ।
২/ ক্যালকেরিয়া ফস
পরিচয় : ক্যালসিয়াম ফসফেট,ফসফেট অফ লাইম ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – স্নায়ুর দুবলতা, মৃগী, অন্ত্রের প্রদাহ, পরিপোষণ বা মেটাবলিজমের ত্রুটি, দাঁত উঠতে দেরি হওয়া, ক্ষয়রোগ, পায়খানার সাথে অভুক্ত দ্রব্য, পেটে বায়ু । ডায়াবেটিস রোগীদের অস্তিভঙ্গ, মস্তিস্কের অবসাদ, ব্রাইটস ডিজিস, রসযুক্ত চমরোগ ।
৩/ ক্যালকেরিয়া সালফ
পরিচয় : ক্যালসিয়াম সালফেট,জিপসাম, প্লাস্টার অফ প্যারিস ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – ফোঁড়া, কাবাঙ্কল, পুঁজযুক্ত ব্রণ, পোড়া ঘাঁ, চুলকানি, ফিস্টুলা, গ্রন্থিস্ফীতি, স্নায়বিক দুর্বলতা, জনন ইন্দ্রিয়ের দুব©লতা, পরিবরতশীল মানসিকতা, পায়ের তালুতে জ্বালা-পড়া এবং চুলকানি, অ্যালোপ্যাথিক ঔষধ খাওয়ার পর শারীরিক দুর্বলতা ।
৪/ ফেরাম ফস
পরিচয় : ফেরোসো ফেরিক ফসফেট, ফসফেট অফ আয়রণ ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – অ্যানিমিয়া, রক্তপাতের ফলে রক্তাল্পতা, নাড়ীর গতি দ্রুত, মাথার যন্ত্রণা, জিভের প্রদাহ, জিভ লেপাকৃত অথবা রক্তাভ, অক্ষুধা, দেহের ওজন এবং শক্তি কমে যাওয়া, শিশুদের মানসিক ও দৈহিক বল হ্রাস, শীণতা, ক্ষুধামান্দ্য ।
৫/ ক্যালি মিউর
পরিচয় : পটাসিয়াম ক্লোরাইড ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – হাটের দুর্বলতা , বুক ধড়ফড় করা, হৃদপিণ্ড বৃদ্ধি পাওয়া, পেরিকাডুইটিস, থ্রম্বসিস, গ্রন্থ বৃদ্ধি, ফুসফুস প্রদাহ, নিউমোনিয়া, পিত্ত নিঃসরণ কম হওয়ার ফলে অজীণ, অক্ষুধা, গলক্ষত, লিভারের দুব©লতা ।
৬/ ক্যালি ফস
পরিচয় : পটাসিয়াম ফসফেট ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – মানসিক দুবলতা, মানসিক বিপযয়, মানসিক অবসাদ, মানসিক কারণে মাথার যন্ত্রণা, মস্তিস্কের দুব©লতা ও অবসাদ, পেটে বায়ু এবং সে কারণে হৃদপিণ্ডের অপক্রিয়া, দুগন্ধযুক্ত পায়খানা, উঠে দাড়ালে মাথা ঘোরা, সেরিব্রাল অ্যানিমিয়া, জননাঙ্গের দুব©লতা ।
৭/ ক্যালি সালফ
প্রয়োগ ক্ষেত্র – হাম,বসন্ত চমপীড়া, বুকে ঘড়ঘড় শব্দযুক্ত হাঁপানী, বিকালের জ্বর,চমে©র উপর ইহার ক্রিয়া অনেক বেশি,স্রাব আঠালো, সবুজবণে©র, দূরন্ধযুক্ত, ইহার অভাবে চম থেকে খুশকি উঠে ।
৮/ ম্যাগ ফস
পরিচয় : ম্যাগনেসিয়াম ফসফেট ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – বিভিন্ন প্রকার ব্যথা ও যন্ত্রণা, মাথার যন্ত্রণা, পেটে ব্যথা, স্নায়ুশূল, স্প্যাজমেডিক পেইন,
স্মৃতিশক্তিহীনতা, চিন্তাশক্তির দুবলতা, স্নায়বিক দুবলতা, দাঁড়ানো অবস্থায় এবং চলতে চলতে মলত্যাগের ইচ্ছা । এই ঔষধটি স্নায়ুকোষে পুষ্টি জোগায় ।
৯/ ন্যাট্রাম মিউর
পরিচয় : সোডিয়াম ক্লোরাইড ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – নুন বেশি খাওয়ার প্রবণতা, কোষ্টকাঠিন্য, মাথা যন্ত্রণা (হাপানি সহ), সদি কাশির প্রবণতা,
হাঁচি, নাক দিয়ে কাঁচা পানি পড়া, হিস্টিরিয়াম, সংজ্ঞালোপ, টাইফয়েড, জ্বরে প্রলাপ বকা,
পেটে শূল বেদনা, লিভারের গোলযোগ, বোধ শক্তির অভাব, ক্রিমি, মস্তিস্কের দুর্বলতা ।
১০/ ন্যাট্রাম ফস
পরিচয় : সোডিয়াম ফসফেট ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – অম্লরোগ, পাকস্থলী এবং অন্ত্রের গোলযোগ, শিশুদের অতিরিক্ত দুধ খাওয়ানোর ফলে ল্যাকটিক এসিড বৃদ্ধি পাওয়া,
গনোরিয়া জিভে হালকা প্রলেপ, বুকের বাঁদিকে ব্যথা (নিপ্ল এর নীচে) ডান কাধে বাত জনিত ব্যথা, স্বপ্নদোষ ব্যতিত ধাতুক্ষয়, অপথ্যালমিয়া, কান থেকে রস পড়া ।
১১/ ন্যাট্রাম সালফ
পরিচয় : সোডিয়াম সালফেড, প্লবারস সল্ট ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – গ্যাসট্রাইটিস, পেটে বায়ু, পেটে ব্যথা, লিভারের গোলমাল, নখের গোড়ায় প্রদাহ এবং পুজ,
অবসাদ, তন্দ্রলুতা, আঁচিল – চোখের চার পাশে, মাথায়, মুখে, বুকে ও মলদ্বারে, নেফ্রাইটিস, মেরুদন্ডে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, সেক্রামে ব্যথা ।
১২/ সাইলিসিয়া
পরিচয় : সিলিকা, সিলিসিক অক্সাইড ।
প্রয়োগ ক্ষেত্র – রিকেট, বাতরোগ, প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের বৃদ্ধি, মধ্য কানের প্রদাহ, দেহের কোথাও পুঁজ, গেঁটেবাত, কোষ্টকাঠিন্য, অম্ল, অজীণ, পুরানো কাশি ।