Thuja কি?
Thuja সৃষ্টির রহস্যঃ
একদিন ধর্ম শাস্র অধ্যায়ী একজন যুবক ডা. হানেমানের কাছে চিকিৎসার জন্য আসেন। তার মূত্র মার্গ হতে গাঢ় পুজ নিঃস্রাব হয় এবং প্রস্রাব কালে খুব জ্বালা পোড়া করে। লিঙ্গ মনিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অপচ্যমান পীড়কা সৃষ্টি হয়েছিল, উহা খুব চুলকায় এবং জননইন্দ্রীয় ফুলে যায়।
ডা. হানেমান লক্ষণ গুলো দেখে রোগীর পুরানো প্রমেহ রোগ (গনোরিয়া) হয়েছে বলে সিদ্ধান্ত করেন। কিন্তু রোগী সে কতা একেবারেই স্বীকার করে না। দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত নির্দোষ মনে করা সকল বিচারকেরই রীতি। সুতরাং ডা. হানেমান সে রোগীকে কোন ঔষধ না দিয়ে তিন দিন পর আবার আসতে বলেন।
তিন দিন পর সে এসে বলল যে তার রোগ সেরে গেছে। কেন এমন হল বুঝতে না পেরে ডা. হানেমান তাকে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন। কিন্তু রোগের কোন কারণ আবিষ্কার করতে পারলেন না। অবশেষে সেই যুবকের মনে পড়ল যে, কয়েক দিন পূর্বে সে ARBOR VITAE গাছের পাতা চিবিয়ে ছিলেন।
ডা. হানেমান তখন সেই গাছের পাতা নিজে পরীক্ষা করেন এবং স্থির নিশ্চিত হলেন যে, সেই ভদ্রলোক সত্য কথাই বলেছিলেন। এর পর তিনি আরো গভীর ভাবে এটি পরীক্ষা করেন এবং এটিকে সাইকোটিক দোষাঘ্ন ঔষুধের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ঔষধ বলে অভিহিত করেন। ডা. হানেমান থুজার ৬৩৪ টি লক্ষণ বর্ণনা করেন।
পরে ডা. এলেন এর ENCYCLOPEDIA তে থুজার ৩৩২০ লক্ষণের উল্লেখ আছে। ডা. ভন গ্রভোল এক প্রকার রসদুষ্ট ধাতুর (হাইড্রোজিনয়েড কনষ্টিটিউশন) কথা উল্লেখ করেন। এই ধাতু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শরীরে প্রমেহ বিষ (গনোরিয়া জীবাণু) অত্যন্ত তীব্র ক্রিয়া প্রকাশ করে। তাই ধাতু দোষ হতে মুক্তির জন্য থুজা ব্যবহার করতে হয়।
ডা. এলেন বলেন
হাইড্রোজিনয়েড ধাতুর মানুষই তো বর্ষকালে এবং ভেজা স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। সাইকোসিস মানে প্লাস (+) সেটার নাম টিউমার, আঁচিল, সিষ্ট, প্রস্টেট গ্লান্ড, অন্ডোকোষ প্রভৃতি। জর্জ ভোথোলকাস থুজাকে যথেষ্ট চাপা এবং গোপনীয়তা মনে করেন। ডা. রবিন মার্ফি ও জে. টি. কেন্ট থুজাকে প্রতারক বলেন। দূষিত সহবাসের কারণে গনোরিয়া সৃষ্টি হয়। গনোরিয়া সাধারণত তিনটি স্টেজ হয়ে থাকে। প্রথম স্টেজ হল ৩ মাস।
২য় স্টেজ হল ৩ বছর। ৩য় স্টেজ হল সুচিকিৎসার অভাবে আজীবন। ডা. কেন্ট বলেন “যদি রোগী গনোরিয়া হঠাৎ করিয়া দমন করিতে চায়, তাহাকে অন্য কোথাও যাইতে দিও কিন্তু গনোরিয়ার ৩ টি স্টেজ সতর্ক করিয়া দিও”। শরীরের ভিতরে প্রতিটি কোষকে আক্রমণ করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী হচ্ছে সাইকোসিস বিষ।
Thuja প্রকৃতিঃ ব্যক্তিকেন্দ্রীক উৎসঃ উদ্ভিদ।
পদার্থ পরিচয়ঃ এক প্রকার ঝাউ জাতীয়
গাছের পাতার রস থেকে
টিংচার প্রস্তুত হয়।
প্রাপ্তিস্থানঃ আমেরিকার ভার্জিনিয়া,
কানাডা ও ইউরোপ।
প্রুভারঃ ডা. হানেমান ১৮১৯ খ্রীঃ
কাতরতাঃ ২য় শ্রেণীর শীতকাতর,
গরমকাতর।
মায়াজমঃ সোরিক, সিফিলিটিক,
সাইকোটিক।
পার্শ্বঃ বাম পার্শ্ব, উপরের বাম পার্শ্ব, নিচে
ডান পার্শ্ব।
দর্শণঃ মুখমণ্ডল শুধু রক্তহীন ও ফ্যাকাসে
নয় বরং মোমের মত সাদা এবং চর্বি
মাখানোর মত চক চক করছে। শরীর
অনবৃত অংশে আঁচিল ও অর্বুদ এবং
দেহ থলথল বিশিষ্ট।
Thuja নির্দেশক / চরিত্রগত লক্ষণঃ
১. আঁচিল, অর্বুদ, ও রক্তহীনতা।
২. ঠাণ্ডায়, বর্ষায়, রাত ৩ টা বা বিকাল ৩টা
বৃদ্ধি।
৩. বদ্ধমূল ধারনা ও স্বপ্নবহুল নিদ্রা।
৪. টিকা, বসন্ত ও গনোরিয়া স্রাব রুদ্ধকরা
হেতু কুফল।
৫. প্রচুর প্রস্রাব হওয়া সত্বেও মূত্রনালীতে
জ্বালা।
৬. মস্তক ব্যতিত শরীর অন্যত্র ঘর্ম।
৭. গনোরিয়া নিজ অর্জিত না হইলে প্রাথমিক
স্রাব থাকে না।
৮. বার বার হাত, থালা, বিছানা ধোয়া।
৯. গনোরিয়া চাপা পড়ে বাতজনিত ও
জয়েন্টে ব্যথা।
১০. মৃত্যু ও উপর হতে পড়ে যাওয়া স্বপ্ন।
১১. সাধারণত একটু ধীরেধীরে কথা বলে
কিন্তু ক্রুদ্ধাবস্থায় অত্যন্ত ক্ষিপ্র গতিতে
কথা বলে।
১২. হস্তমৈথুনের প্রবৃত্তি এত বেশি যে নিদ্রা
কালে ও নিবৃত্তি নাই।
মানসিক লক্ষণঃ
১. গোপনীয়তা, সন্দেহপ্রবণ কাউকে বিশ্বাস
করে না।
২. বদ্ধমূল ধারনা, যেন কোন অপরিচিত
ব্যক্তি তার পাশে রয়েছে, যেন তার দেহ ও
আত্মা পৃথক।
৩. পেটে কোন জীবন্ত প্রাণী রয়েছে, যেন সে
কোন দৈব শক্তির প্রভাবধীন হয়ে আছে
এরুপ অনুভূতি।
৪. এমন অনুভূতি যেন দেহ বিশেষ করে অঙ্গ
প্রতঙ্গ কাঁচ নির্মিত এবং তা সহজেই
ভেঙ্গে যাবে।
৫. অত্যন্ত বদমেজাজ, বাচতে অনিচ্ছা ও
অত্যন্ত একগুঁয়ে।
ক্রিয়াকালঃ ৬০ দিন।
ইচ্ছাঃ ঠাণ্ডা পানীয়, ঠাণ্ডা খাদ্য ও লবন।
অনিচ্ছাঃ মাংস, আলু ও পিয়াজ।
বৃদ্ধিঃ রাতে, রাত ৩টা, বেলা ৩টা, ঠাণ্ডা
আর্দ্র আবহাওয়ায়, ঠাণ্ডা জলে,
প্রাতরাশের পর, চর্বি জাতীয় খাদ্য, চা,
কফি, মাদক, উজ্বল আলোতে, নাক
ঝাড়লে এবং টিকা নেওয়ার পর।
উপশমঃ খোলা বাতাসে, গরমে, নড়াচড়ায়,
চাপনে, ও মর্দনে।
সতর্কঃ কাঁচা পিয়াজ নিষিদ্ধ।
বিঃদ্রঃ যে কোন রোগ যদি গনোরিয়া কারণে
হয় বা অর্জিত ও উত্তরাধিকার সূত্রে
প্রাপ্ত, তাহলে প্রথমে থুজা।