Conium Mac একটি উদ্ভিজ্জ ঔষধ
ইহা একটি গভীর এ্যান্টি-সোরিক, এ্যান্টি-সাইকোটিক, এ্যান্টি-সিফিলিটিক ও এ্যান্টি-টিউবারকুলার মায়জমিক ঔষধ |
কাতরতা বিবেচনায় ইহা একটি শীতকাতর ঔষধ |
যে সকল বলবান ব্যাক্তি অলস অবস্থায় দিন কাটায়, মেজাজ খিটখিটে থাকে, ঝগড়াটে, অল্পতেই উত্তেজিত হয়, সবকিছুতেই উদাসহীনতা, হতাশ, অতিশয় ভীরু, সমাজের প্রতি বিরূপ মনোভাবাপন্ন, কারো সাথে সহজে মিশিতে পারে না, অপরের উপর প্রভাব খাটাতে চায়, কোন প্রকার প্রতিবাদ সহ্য করে না সেই সকল ব্যাক্তিদের জন্য কোনিয়াম উপযোগী |
কোনিয়ামের রোগী হাঁটবার সময় গোছালোভাবে পা ফেলতে পারে না |
হাঁটার সময় হঠাৎ করে শরীরের শক্তি লোপ পায়, পায়ে যন্ত্রনাদায়ক আড়ষ্টতা দেখা যায় |
কোনিয়ামের রোগীর স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা থাকে |
কোন প্রকার মানসিক পরিশ্রম সহ্য হয় না | যে কারনে কোন বিষয় নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করতে পারে না |
কোনিয়ামের রোগীর, কোন বিষয়ের উপরেই একাগ্রতা বা মনোঃসংযোগ থাকে না |
পড়াশোনা, কাজ-কর্ম, ব্যবসা সব কিছুতেই একটা গাছাড়া ভাব থাকে অর্থাৎ, কোন আগ্রহ থাকে না |
Conium Mac
রোগী একাকী থাকতে ভয় পায় অথচ লোকসঙ্গ পছন্দ করে না |
কোনিয়ামের রোগী সকালে বিছানায় থাকাকালীন প্রচন্ড দূর্বলতা অনুভব করে থাকে|
রোগীর, সকালে ঘুম থেকে উঠার সময় মাথার পিছনে মৃদু বেদনা করে|
মাথা নাড়াচড়া করিলে, সামান্য শব্দ হইলে, কেহ কথা বলিলে মাথাব্যথা বাড়ে |
একপার্শ্বিক মাথাব্যথা, বিশেষতঃ বাম পাশে হয়ে থাকে |
খাবার পর মাথাব্যথা বৃদ্ধি হয়ে থাকে | মাঝে মাঝে ডানদিকের রগে কষে ধরার মত চাপবোধ হয় |
স্ক্রফুলা ধাতগ্রস্থ ব্যাক্তিদের চোখের রোগে, আলো অত্যাধিক অসহনীয়, অথচ চোখে কোন প্রকার প্রদাহ না থাকলে কোনিয়ামকে প্রথম স্মরন করিবেন |
নাকের নরম টিউমারেও কোনিয়াম উপকারী | নাক হতে মাঝে মাঝে রক্তস্রাব হয়ে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর, কানের ভিতরে কিছুদিন পর পর শো শো শব্দ হয় |
কান হতে রক্তের রংয়ের মতো বা হলদেটে স্রাব হয়ে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর গলাব্যথা থাকে |
জিহ্বায় গোড়ায় ক্ষত হয়ে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর, দুই স্কন্ধের মধ্যবর্তী স্থানে ব্যথা করে থাকে |
মেরুদন্ডের হাড়ে ও ত্রিকাস্থি স্থানে মৃদু মৃদু ব্যথা করে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর, একটানা কষ্টকর শুষ্ক কাশি দেখা যায় |
কন্ঠনালীর ভিতর একটি স্থান যেন শুষ্ক হয়ে গেছে, সেখানে সুড়সুড় করে, সেজন্য কাশি হয় |
শুইবার সময় বা কথা বলার সময় জোরে জোরে ঘন ঘন কাশি হয়ে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর, হাতের কব্জি ঘুরালে, হাত ঝাঁকি দিলে, রোগীর জয়েন্ট -এ এবং চলাফেরার সময় রোগীর হাঁটুর জয়েন্টে কটকট শব্দ হয়ে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর দেহের নীচের দিকে পক্ষাঘাত হয়ে থাকে |
অনেক সময়, নিচের দিক অর্থাৎ পা হতে শুরু হয়ে উপরের দিকে ওঠে |
কোনিয়ামের রোগীর, পায়ের পেশীর অত্যন্ত দূর্বলতা থাকে |
সেকারনে, পা দুইটি উঁচুতে রাখিলে অর্থাৎ চেয়ারে বা বিছানার উপর উঁচু করিয়া রাখিলে ব্যথার উপশম হয়ে থাকে |
কিন্তু, কোনিয়ামের রোগী যদি বাতের ব্যথায় রোগী হয় তখন বিছানায় শুয়ে পা দুটি নিচে ঝুলিয়ে রাখতে চায় |
কোনিয়ামের রোগীর পাকস্থলীতে ব্যথাসহ আক্ষেপ থাকে |
কিছু খাইলে ব্যথা কমে যায় | খাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর পেটে গ্যাস হয়, জ্বালা করে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর, পেটের বায়ু ও মলত্যাগ কালে মল ঠান্ডা অনুভূত হয়ে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর, শুয়ে থাকলে বা বিছানায় পাশ ফেরার সময় মাথা ঘোরে, চলার সময় মাথা এক পাশে ফেরালে মাথা ঘোরে |
মনে রাখবেন, কোনিয়ামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষন হলো, দিনে হোক বা রাতে হোক ঘুমালেই প্রচুর ঘাম হয় যতক্ষণ ঘুমাবে ততক্ষণ ঘামতে থাকবে | ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে ঘাম বন্ধ হয়ে যায় |
কোনিয়াম ঔষধটি গ্ল্যান্ডের উপর খুব ভাল কাজ করে |
ঘাড়, কুঁচকির গ্রন্থিগুলি বৃদ্ধি হয়ে থাকে |
সামান্য ঠান্ডায় শরীরের গ্ল্যান্ডগুলি ফোলে, পাথরের মত শক্ত হয়, টনটন করে ও সূচ ফোটানো ব্যথা হয় | বৃদ্ধদের প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড বৃদ্ধিতেও ইহা উপকারী |
কোনিয়াম অন্ডকোষ ও স্তনের স্ফীতি এবং শীর্নতার কার্য্যকরী ঔষধ |
আঘাত লেগে অন্ডকোষে বা স্তনে টিউমার হলেও কোনিয়াম উপকারী |
কোনিয়াম ঔষধটির, স্তন বা জরায়ুর টিউমারের ক্ষেত্রে পাথরের মত শক্ত, জ্বালা, সূচ ফোটানো বা চিড়িকমারা ব্যাথা ও ভারবোধ থাকে |
যে কোন প্রকার আঘাতজনিত কারনে হোক বা অন্য যে কোন কারনেই হোক না কেন, টিউমার যদি কঠিন, পাথরের মত শক্ত এবং ভারবোধ হয় তবে কোনিয়াম উপকারী |
কোনিয়াম প্রস্টেট গ্ল্যান্ড বৃদ্ধি বা জরায়ুর পীড়াহেতু প্রস্রাবের সমস্যায় খুবই কার্যকরী ঔষধ | বৃদ্ধদের ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হলে অথবা অনেক সময়, অসাড়ে ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব বের হলে ইহা উপকারী |
Conium Mac রোগীর, প্রস্রাব সহজে হতে চায় না | প্রস্রাবের থেমে থেমে চিকন ধারায় হয়ে থাকে | প্রস্রাব হতে হতে থেমে যায়, আবার চালু হয় | সেকারনে প্রস্রাব ঠিকমতো চালু রাখতে কোঁথ দিতে হয় | অনেক সময়, প্রস্রাব ত্যাগ কালে অত্যন্ত যন্ত্রনা হয়ে থাকে |
কোনিয়ামের রোগী, দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে স্বস্তিবোধ করে |
এই রোগীর প্রস্রাব পরিস্কার পাত্রে কিছুক্ষন রেখে দিলে প্রস্রাব ঘোলা হয়ে যায় |
কোনিয়ামের পুরুষ রোগীদের প্রস্রাবের পর শুক্রপাত এবং মহিলা রোগীদের প্রস্রাবের পরে প্রদরস্রাব দেখা যায় |
কোনিয়ামের রোগীর শক্ত মলসহ কোঁথানি থাকে |
বারে বারে মলত্যাগের বেগ হয় | প্রতিবার মলত্যাগের পরে কম্পন সহ দুর্বলতা দেখা যায়, বুক ধড়ফড় করে থাকে | পুরুষ রোগীরা মলত্যাগকালে কোঁথানির কারনে হারিশ বের হয়ে আসে আর স্ত্রীলোক মলত্যাগকালে কোঁথানির কারনে যোনিপথে জরায়ু বাহির হতে চায় এরকম অনুভূতি হয়ে থাকে |
জরায়ু ভারবোধ হয়, নিচের থেকে নেমে যাওয়ার মতো অনুভুতি হয়ে থাকে |
জরায়ু মুখ ও জরায়ু গ্রীবার কঠিণতা বোধ হয় | জরায়ু ফুলে শক্ত হয় এবং জরায়ুতে সূঁচ ফোটানো ব্যথা অনূভুত হয় |
ঋতুস্রাবের পূর্বে যৌনাঙ্গের চারিপাশে উদ্ভেদ হয় ও প্রচুর চুলকায় |
কোনিয়ামের রোগীর ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয় | সাধারণত দেরীতে হয়ে থাকে |
ঋতুস্রাব বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ধীরে ধীরে হয়ে থাকে | সামান্য পরিমানে স্রাব হয় এবং স্বল্পকাল স্থায়ী হয়ে বন্ধ হয়ে যায় |
Conium Mac
রোগীর, প্রতিবার ঋতুর পূর্বে, সময় ও পরে স্তন দুটি ফুলে শক্ত হয়ে টাটায় |
সামান্য স্পর্শেও ব্যথা হয় | বিশেষ করে স্তনের বোঁটায় শীতলতাসহ সূঁচ ফোটানো মত ব্যথা করে |
স্তন্য হাত দিয়ে খুব শক্ত করে চেপে রাখতে ইচ্ছা করে |
কোনিয়ামের রোগীর, ঋতুস্রাবকালে মুখে ব্রণ বা চোখে ফুস্কুড়ির মতো ওঠে থাকে |
কোনিয়ামের রোগীর, ঋতুস্রাবকালে গোসল করিতে অনিচ্ছা হয়ে থাকে |
তাছাড়া, ঋতুস্রাবকালে ঠান্ডা লাগাইলে, পানিতে হাত ডুবাইলে, বা ঠান্ডা পানিতে গোসল করিলে ঋতুস্রাব বন্ধ হইয়া যায় |
ঋতুস্রাব অবরুদ্ধ থাকার কারনে বন্ধ্যাত্ব হইলে কোনিয়াম একটি নির্ভরযোগ্য ঔষধ | মাঝে মাঝে স্তনে, ওভারীতে ও জরায়ুতে ব্যথা করলে এবং স্তনবৃন্তে শীতলতা অনুভব করলে আরো ভালো কাজ করে থাকে |
কোনিয়ামের পুরুষ রোগীরা, স্ত্রীলোক দেখিলে বা তাদের সাথে কথা বলিলে, মনে মনে কুরুচিপূর্ণ চিন্তা বা মিলনের চিন্তা করিলে, এমনকি মনে মনে ভাবিলেও অসাড়ে শুক্রপাত হয়ে যায় |
Conium Mac পুরুষ রোগীর, স্ত্রী সহবাসের ইচ্ছা অত্যন্ত থাকে, কিন্ত সঙ্গমশক্তি আংশিক বা সম্পূর্ণ অক্ষমতা থাকে | সহবাসকালে সোহাগ আলিঙ্গনের সময় লিঙ্গ নিস্তেজ হইয়া যায় |
অল্প বয়সে বিধবা হলে যৌন ইচ্ছা চাপা দেওয়ার দরুন বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয় | এ অবস্থায় কোনিয়াম খুবই কার্য্যকরী | সেকারনে, কোনিয়ামকে বিধবাদের ঔষধও বলা হয়ে থাকে |
মূলতঃ স্ত্রীলোকের সেক্সশক্তি থাকা সত্বেও তাহা চাপা দেওয়ার কারনে যে কোন রোগের সৃষ্টি হলে কোনিয়াম উপকারী |
এক্ষেত্রে, অবিবাহিতা বয়স্ক, বিধবা, এমনকি স্বামী বিদেশ অথবা বিভিন্ন প্রতিকূলতার জন্য বা স্বামীর অক্ষমতার জন্য সহবাসের স্বাদ বঞ্চিত নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়ে থাকে |
যে সকল স্ত্রীলোক অতিরিক্ত সেক্সশক্তি সম্পন্ন হয়ে থাকে তাহাদের মিলনে অপরিপূর্ণতায় কারনে জরায়ু বা ওভারীতে রক্তসঞ্চয় হলে কোনিয়াম উপকারী |
যৌন ইচ্ছা ও সার্মথ্য থাকা সত্বে দীর্ঘদিন যৌন উত্তেজনা চেপে রাখার ফলে অথবা যে সকল ব্যাক্তি (পুরুষ ও নারী) যৌন অতৃপ্তিতে ভুগে বিভিন্ন রোগে জর্জরিত তাদের জন্য কোনিয়াম একটি মূল্যবান ঔষধ |
অতিরিক্ত যৌন মিলনের ফলে যে সকল ব্যাক্তি (পুরুষ ও নারী) শারীরিক ও মানসিক দূর্বলতা, বিষন্নতাসহ বিভিন্ন রোগে জর্জরিত হয় তাদের জন্যও কোনিয়াম একটি মূল্যবান ঔষধ |
কোনিয়ামের রোগীর মন উৎফুল্ল, হাসিখুশি এবং দুঃখ কষ্ট, বিষন্নতা দুই সপ্তাহ অন্তর পযার্য়ক্রমে আসে |
অর্থাৎ পনের দিন আনন্দ, উৎফুল্ল, হাসিখুশি, ফুরফুরে থাকে পরের পনের দিন বিষন্নতা, মন মরা, রুক্ষ মেজাজী হয়ে থাকে |
কেনো এরকম ঘটে তাহা রোগী নিজেও জানে না |
বিঃদ্রঃ– যদিও কোনিয়াম একটি উদ্ভিজ্জ ঔষধ কিন্তু ইহা একটি বিষ বৃক্ষ | ইহার অপর নাম হেমলক | আইরিশরা এই গাছকে ডাকে Devil’s bread নাম।