সাদাস্রাব কি?
লিউকোরিয়া বা সাদাস্রাব বা শ্বেতপ্রদর যে কোনো কারণেই হোক না কেন সঠিক লক্ষণ নির্বাচণে হোমিও চিকিৎসা করলে এই সমস্যা থেকে সহজেই রেহাই পাওয়া যায় ।
পালসেটিলা(PULSATILA):
পরিবর্তনশীলতা(শারিরীক ও মানসিক)এমনকি রোগ ক্রমাগত স্থান ও রুপ পরিত্যাগ করে ।
নম্রতা ও ক্রন্দনশীলতা (রাগ আছে তবে বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারে না)। আবেগ প্রবন, অল্পতেই কেঁদে ফেলে
গাত্র সর্বদা উত্তপ্ত ও গরমে বৃদ্ধি । গরম-আলো-বাতাসহীন বদ্ধ ঘরে রোগীনী বিরক্ত বোধ করে।
কপালে হাত রাখিয়া চিৎ হইয়া শুইতে ভালবাসে ; বাম পার্শ চাপিয়া শুইতা পারে না।
যত ব্যথা তত শীত কিন্তু গরম সহ্য হয় না ।
রাত্রীর শুরুতে ঘুমে অস্থীর কিন্তু শেষ রাত্রে নিদ্রাহীনতা।
ম্যাজিক বাক্যঃজিহ্বা ,ঠোঁট শুস্কতা সত্ত্বেও পানিপানে অনীহা । (তৃষ্ণাহীনতা) অর্থাৎ গলা শুকিয়ে থাকে কিন্তু কোন পানি পিপাসা থাকে না।
উপরের লক্ষণ যুক্ত রমনীদের জন্য সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া রোগ সহ যাবতীয় রোগের জন্য কয়েকমাত্রা পালসেটিলা যথেষ্ট প্রয়োজনে
সাদাস্রাব হোমিও চিকিৎসা
সিপিয়া (SEPIA):
বিষণ্ন্তা অ ভীরুতা। স্বভাবে কৃপন-লোভী, একলা থাকতে ভয় পায়
ক্রন্দনশীলতা ও নিজ পেশা পরিবারের লোকজনদের প্রতি উদাসীন।
উদর শূন্যবোধ (ক্ষুধা নয় ক্ষুধার ন্যায় অনুভূতি )।
মলদ্বারে, গলায় ,মাথায় পেটের মধ্য একটি বল বা ঢেলার মত আটকাইয়া আছে অনুভূতি।
জরায়ুর শিথিলতা ও জরায়ু বহির্গমনশীল হয়ে থাকে। ঘনঘন গর্ভপাত।
স্নানে অনিহা এবং পরিশ্রমে উপশম বোধ করে ।
মুখের মেছতা, যৌনাঙ্গে এবং পায়খানার রাস্তায় ভীষণ চুলকানি, ,
রোগী সবর্দা শীতে কাঁপতে থাকে । দুধ হজম করতে পারে না ,
ম্যাজিক বাক্যঃ সিপিয়ার রোগিনীর পেট পায়ই দশমাসের পোয়াতির মত বড় দেখায়
উপরের লক্ষণ যুক্ত রমনীদের জন্য সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া রোগ সহ যাবতীয় রোগের জন্য কয়েকমাত্রা সিপিয়া
প্রয়োজনে
বোরাক্স (BORAX):
উচু থেকে নিচে নামতে (শিশুদের ক্ষত্রে কোল থেকে অন্য কোলে নিতে কেদে ওঠা )বা নিম্নগতিতে ভয়।
শব্দভীতি বোরাক্সে প্রবল । গরম সহ্য হয়না।যে সকল নারীরা সহজে কাঁদে, মনটা নরম তাদের .
মলদ্বারে ঘা, প্রস্রাবদ্বারে ঘা বিশেষ করে শিশু মুখে ঘা বশত স্তন ছাড়িয়া দিয়া আবিরত কাঁদিতে থাকে ।
শিশুদের মাথার চুল ও ভ্রুযুগলে অত্যন্ত জটা বাঁধে।
“হাজাকর” শ্বেতপ্রদর ,যোনি – চুলকানি ও বন্ধাদোষ নিবারণ করে।
উপরের লক্ষণ যুক্ত রমনীদের জন্য সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া রোগ সহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসায় অব্যার্থ মহাঔষধ।
বোরাক্স –প্রয়োজনে
নেট্রাম মিউর (NAT MUR ):
যে সকল নারীর স্বামীসহবাসে অনিচ্ছা, গরমকাতর, মাসিক কম ।
যে সব নারীকে সান্তনা দিলে আরো রেগে যায় এবং কাচা লবন প্রিয়( ভাতের সহিত খায়) তাদের জন্য নেট্রাম মিউর, সেই নারীর পক্ষে নেট্রাম মিউর খুব কার্যকর হয়ে থাকে।
টকগন্ধ যুক্ত লিউকোরিয়া হলে ন্যট্রাম মিউরের সাথে ন্যাট্রাম ফস -১২এক্স বা বায়োকেমিক ১২এক্স ৪ বড়ি দিনে তিনবার সেব্য
ক্যালকেরিয়া কার্ব(CAL CARB):
মোটা থলথলে মাংসল চেহারা (মনে হয় হাতে কোন হাড় নেই)। শরীরের চাইতে পেট বেশী মোটা।
শিশুকালে দাঁত উঠতে বা হাঁটা শিখতে দেরী হয় থাকে। পা সব সময় ঠান্ডা থাকে।
মল, মূত্র, ঘাম সহ সকল স্রাবই টক গন্ধ যুক্ত । মাথার ঘামে বালিশ ভিজে যায়, মুখমন্ডল ফোলাফোলা।
ডিম প্রিয় (সিদ্ধ ডিম খেতে খুব পছন্দ)। ইত্যাদি লক্ষণ যে সাদা স্রাবের রোগীর রয়েছে । তাদের জিন্য ক্যালকেরিয়া কার্ব সবচেয়ে উত্তম ঔষধ।
জনোসিয়া অশোকাঃ(JONESIA ASHOKA ):
প্রচুর সাদাস্রাব , সবসময় অন্তর্বাস ভিজে থাকে ,সামান্য চুলকায় । এজন্য খুব দুর্বলতা বোধ করে তাদের জন্য এটি মাদার টিংচার ৩/৪ ফোঁটা করে দিনে ২/৩ বার সেব্য ।
মার্ক সল (MERC SOL ):
প্রচুর ঘাম হয় কিন্তু রোগী আরাম পায় না, ঘামে দুর্গন্ধ বা মিষ্টি গন্ধ থাকে, ঘামের কারণে কাপড়ে হলুদ দাগ পড়ে যায়
প্রতিবাদী – কথার বিরোধীতা সহ্য করতে পারে না
জিহ্বায় দাতের দাগ পড়ে , সরস ও মোটা জিহ্বা ঘুমের মধ্যে মুখ থেকে লালা পড়ে বালিসে দাগ পড়ে ।
পায়খানা করার সময় কোথানি, পায়খানা করেও মনে হয় আরো রয়ে গেছে
অধিকাংশ রোগ রাতের বেলা বেড়ে যায়, রোগী ঠান্ডা পানির জন্য পাগল, ইত্যাদি।
উপরের লক্ষণ গুলো থাকলে সাদাস্রাবেও মার্ক সল প্রয়োগ করতে পারেন।
সাদাস্রাব চায়না (CHINA OFF):
অত্যধিক সাদাস্রাবের কারণে দুর্বলতা দেখা দিলে চায়না আবশ্যক ।
মেজাজভীষণ খিটখিটে, আলো-গোলমাল-গন্ধ সহ্য করতে পারে না।
মাথা ভারী ভারী লাগে, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া , অল্পতেই বেহুঁশ হয়ে পড়া।
কানের ভেতরে ভো ভো শব্দ হওয়া, হজমশক্তি কমে যাওয়া।
পেটে প্রচুর গ্যাস হওয়া ইত্যাদি লক্ষন যে সাদা স্রাবের রোগীর পাওয়া যাবে তার জন্য চায়না উপযোগী। চায়না
আইয়োডিয়াম (IODIUM):
ক্ষুধা খুব বেশী সারাদিনে প্রচুর খায় কিন্তু তারপরও দিনদিন শুকিয়ে যেতে থাকা ,
গরম সহ্য করতে পারে না।
দ্রুত হাঁটার অভ্যাস, দৌড়াতে ইচ্ছা হয়,
লালাগ্রন্থি ও প্যানক্রিয়াসের রোগ। গ্লাণ্ডের সমস্যা থাকলে ।
যে-সব রোগ অমাবশ্যা পূর্ণমায় বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি
উপরোক্ত লক্ষণ যুক্ত রগীনির সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া হলে আয়োডিয়াম
সাদাস্রাব হোমিও চিকিৎসা
আর্সেনিক এলবম (ARSENIC ALB):
অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত অধিক পরিমান সাদাস্রাব। স্রাবে যোনিদ্বার হাজিয়া যায়।
ঝিনঝিনে জ্বালা করে কিন্তু সেই জ্বালা গরম পানিতে আরাম বোধ।
রোগী অস্হির দুর্বল ও আত্মহত্যার ইচ্ছা ইত্যাদি লক্ষণ বিদ্যমান তাদের লিউকোরিয়া পীড়ায় আর্সেনিক এলবম যথেষ্ট
আর্সেনিক আয়োড (ARSENIC IOD ):
যে রমনীদের সাদাস্রাব ,সাদা বা হলুদ বা যে কোন বর্ণের হোক না কেনো ;
স্রাব যেখানে লাগে সেখানেই হাজিয়া যায়,জ্বালা করে সেই ক্ষেত্রে ঔ রমনীর জন্য আর্সেনিক আয়োড
বিঃদ্রঃ- ডাক্তারের পরার্মশ ছাড়া ঔষধ খাবেন না।ডাক্তারের পরার্মশ ছাড়া ঔষধ খেয়ে বিপদ ঢেকে আনবেনা।অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন, সুস্থ থাকুন।(