শীতকালে চামড়া ফাটা ও হোমিওপ্যাথি । শীত কালে ঠান্ডা লাগিয়া অনেকের হাত পা ,পায়ের তালু,ঠোট,মুখ প্রভৃতি ফাটিতে দেখা যায়।ইহা টাটায়, চুলকায়,ব্যাথা করে।পায়ের গোড়ালি বা পায়ের তলা ফেটে যাওয়া একটি বিব্রতকর সমস্যা।
এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় ক্র্যাকড হিল।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এধরনের সমস্যায় পড়তে হয় মহিলাদের।এমনকি অনেক সময় জুতা পর্যন্ত পরতে সমস্যা হয়।
অনেক সময় রক্ত পর্যন্ত বের হয় এবং চুলকাতে ইচ্ছা করে।সাধারণভাবে পায়েরগোড়ালি বা পায়ের তলা ফেটে গেলে সাদা ভ্যাসলিন সকালে ও রাতে লাগালে ভালো হয়।শীতকালে কম বেশি সবার পায়ের গোড়ালি ফাটে।
শীতকালে চামড়া ফাটার কারণঃ-
পায়ের গোড়ালি ফাটা নিজে কোনো রোগ নয় তবে রোগের সূত্রপাত এবং রোগের কারণ এটা বলা যেতেই পারে।যেসব কারণে গোড়ালির ত্বক ফাটতে পারে, সেগুলো হলো অতিরিক্ত গরম পানিতে পা বেশি সময় ভিজিয়ে রাখা,পানিশূন্যতা,
অতিরিক্ত ঘষাঘষি,ত্বকের শুষ্কতা,অতিরিক্ত ওজন, শক্ত জায়গায় খালি পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা ইত্যাদি।পেছন খোলা জুতা পরলেও এ সমস্যা বাড়ে।
এ ছাড়া শক্ত পুরু চামড়া বা থাইরয়েডের হাইপারকেরটোসিস,সোরিয়াসিস, জুভেনাইল প্লান্টার ডারমাটোসিস,এটোপিক ডারমাটোসিস,ডায়াবেটিস রোগীদের ঝুঁকি বেশি।বংশানুক্রমেও এই রোগ দেখা যায়।
উপসর্গঃ-
এটা খুবই সাধারণ একটি সমস্যা মনে হলেও এই থেকে নানা জটিলতা হতে পারে।যেমন: ব্যথা তো হয়ই,অনেক সময় পায়ের নিচের ত্বক ফেটে রক্তক্ষরণ হতে পারে।এই ফাটার মধ্য দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করে সংক্রমণঘটাতে পারে।আর তা থেকে সেলুলাইটিস এমনকি আলসার পর্যন্ত হতে পারে।
প্রতিকারের উপায়ঃ-
শীতকালে চামড়া ফাটা ও হোমিওপ্যাথি, গোড়ালি ফাটারোধে যত্নবান হওয়া দরকার ।
শীতকাল অথবা গরমকাল,শরীর যেন পানিশূন্য না হয়,সে জন্য প্রচুর পানি পান করবেন।
গোসলের সময় পিউমিস স্টোন ব্যবহার করে শক্ত মৃত ত্বক তুলে ফেলা ভালো।
পায়ের গোড়ালিতে বারবার ময়েশ্চারাইজিং লোশন বা ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন।যতবার পা ভেজাবেন (যেমন অজু করার সময়) ঠিক ততবারই পা মুছে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগাবেন।
খালি পায়ে একদমই হাঁটবেন না এবং শীতে পেছন খোলা জুতা না পরাই ভালো।কেডস বা পাম্প সু ব্যবহার করতে পারেন।
ময়েসচারাইজার সমৃদ্ধ লোশন কিংবা পেট্রোলিয়াম জেলি বা গ্লিসারিন লাগিয়ে একটি সুতি মোজা পরে ঘুমোতে যাবেন।
পায়ের তলার মোটা চামড়া তোলার জন্য মাজুনি কিংবা ঝামা ইট ব্যবহার করুন নিয়মিত।সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন গরম পানিতে সামান্য লবণ এবং শ্যাম্পু দিয়ে ২০ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখবেন।
এতে পায়ের ময়লা,ধুলোবালি, ফাঙ্গাস এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হবে এবং পায়ের ত্বক এবং নখ ভালো থাকবে।ডায়াবেটিস, স্নায়ুর সমস্যা বা থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে তার যথাযথ চিকিৎসা নিন।সেই সাথে পায়ের গোড়ালি ফাঁটার সমস্যা ভয়ানক হলে অথবা কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে চিকিৎসা নিবেন।
শীতকালে হাত পা ও চামড়া ফাটার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ
পেট্রোলিয়মঃ- রুক্ষ মেজাজ হঠাৎ চটিয়া উঠে।শীত কাতর,পায়ের তলা,বগলে দুর্গন্ধ ঘাম।এই ধাতুর রোগীদের শীতকালে গা,হাত,পা ফেটে যায়।শরীর ফাটিয়া ক্ষিরাইর মত দেখা যায়।গ্রীশ্ম বা বর্ষাকাল আসিলেই আস্তে আস্তে উক্ত পীড়া আরোগ্য হইয়া যায়।এই রোগীদের জন্য পেট্রোলিয়াম উপযোগী।
গ্রাফাইটিসঃ স্হূলকায় কোষ্ঠবদ্ধ,আশংকা পরায়ন,শীত কাতর এই ধাতুর রোগীদের গা,হাত পা ফাটায় ইহা বিশেষ উপযোগী।
যে রোগীর গায়ের চামড়া শুষ্ক,ঘর্মহীন,যদিও সামান্য ঘর্ম হয় তাহা দূর্গন্ধযুক্ত হয়। শীতকালে চর্মপীড়া দেখা দেয়।
এনাকার্ডিয়াম অক্সিডেন্টালঃ ইহা পায়ের তল ফাটার একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ।বড়ই দুর্বল,বিষন্ন,মমতাহীন, নিষ্ঠুর,সর্বদা সন্দেহ পরায়ণ,
সর্বদা দুইটি সত্বা দ্বার নিয়ন্ত্রিত হয়।একটি ভালো একটি মন্দ সত্বা তাকে টানাটানি করে।স্মৃতি শক্তি হঠাৎ হ্রাস পায়।উপরোক্ত লক্ষণ সমষ্টিসহ যে রোগীর হাত পায়ের চামড়া ফাটা তাদের জন্য উপযোগী।
কেন্ট রেপার্টরির সাহায্যে হাত পা ফাটার একক ঔষধ নির্বাচনঃ
CRACKS : Æsc., aloe., alum.,
am-c., ant-c., arn.,
aur., bad., bar-c.,
bry., calc-s.,
Calc., carb-an., Carb-s.,
carb-v., cham., com., ccl., Graph.,
hep., hydr., iris., kali-c.,
kali-s., kreos., lach., lyc., mag-c.,
mang., merc., nat-c., nat-m.,
nit-ac., olnd., osm., pæon.,
Petr., phos., psor., Puls., rhus-t., ruta., Sars.,
Sep., sil., Sulph., teucr., viol-t.
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া মেডিসিন সেবন করবেন না।