মেয়েদের সাদাস্রাব নিয়ে কিছু গুরুত্বপুর্ন কথা। আজকে আমি আপনাদের সাথে মেয়েদের খুব কমন একটি সমস্যা whitish veginal discharges বা সাদাস্রাব নিয়ে খুব গুরুত্ব পূর্ন কিছু কথা বলব, আজকের এই পোষ্ট থেকে জানতে পারবেন, কখন অতিরিক্ত সাদাস্রাব বা লিউকোরিয়া কে আমরা স্বাভাবিক বলব কখন অস্বাভাবিক বলব,অথাৎ কখন আপনি চিকিৎসকের শরানাপন্ন হবেন এবং বাসায় কি কি নিয়মে বা উপদেশ মেনে চললে সহজে এর থেক পরিত্রাণ লাভ করতে পারবেন
এই সাদাস্রাব কে সাধরনত আমরা লিউকোরিয়া বলে থাকি,
প্রথমে আমরা জেনে নেই এই সাদা স্রাব জিনিসটা আসলে কি? এটি আমাদের যৌনাঙ্গের কিছু গ্রন্থি বা গ্ল্যান্ডের নিঃসৃত তরল পদার্থ বা সিক্রেশন, যা মেয়েদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। এই সিক্রেশন সাধারণত বর্ণহীন বা ইষৎ সাদা গন্ধহীন এবং পিচ্ছিল হয়ে থাকে যা স্বাভাবিক নিয়মে মেয়েদের মাসিকের রাস্তা কে বাহিরের ফরেন বডি বা ইনজুরি থেকে নিরাপদ রাখে। আসুন এখন আমরা জেনে নিই কীভাবে এই সাদা স্রাব কে আমরা স্বাভাবিক বা মেয়েদের কখন কখন এই সাদা স্রাব স্বাভাবিকভাবেই বেশি হতে পারে?
একটি মেয়ে বাচ্চার জন্মের পরপরই প্রথম দশদিন অতিরিক্ত সাদা স্রাব হতে পারে।এছাড়া একটি মেয়ে যখন বয়সন্ধিকালে আসে তখন মাসিক শুরু হওয়ার সময় অতিরিক্ত সাদাস্রাব হতে পারে। মাসিক শুরু হওয়ার ঠিক আগে এবং মাসিক ভাল হয়ে যাওয়ার ইমিডিয়েড পরে অতিরিক্ত সাদা স্রাব হতে পারে।মেনস্ট্রুয়াল সারকেল এর মাঝামাঝি সময়ে যখন ওভূলেশন হয় অর্থাৎ যখন ডিমফুটে তখন অতিরিক্ত সাদাস্রাব হতে পারে।এছাড়া প্রেগনেন্সির সময় অতিরিক্ত সাদা স্রাব হতে পারে।উপরের এই কারণগুলোর যেকোনো একটি যদি থাকে৷ তাহলে তার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই
এখন আমরা জেনে নেই সাদাস্রাব এর সাথে কি কি লক্ষণ থাকলে আমরা তাকে অস্বাভাবিক বলব।
১। সাদা স্রাবের সাথে যদি দুর্গন্ধ থাকে
২। মাসিকের রাস্তা যদি চুলকানো থাকে।
৩। যৌনাঙ্গে যদি অসস্তিবোধ হয়।
৪। তলপেটে যদি ব্যাথা হয়।
৫। সহবাসের সময় যদি জালাপোড়া থাকে।
৬। প্রস্রাবের সময় যদি জ্বালাপোড়া থাকে।
৭। সাদা স্রাবের সাথে যদি ব্লিডিং বা রক্ত মিশ্রিত থাকে।
৮। সাদাস্রাব এর রং পরিবর্তন হয় যদি সাদা বা সবুজাভাব হয়ে যায়।
মেয়েদের সাদাস্রাব নিয়ে কিছু গুরুত্বপুর্ন কথা
উপরের আটটি লক্ষণ এর যেকোনো একটি লক্ষণ থাকলেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
সাধারনত ব্যাকটেরিয়া ফাংগাল, প্রোটোজোয়াল ইনফেকশন এবং কোন কোন ক্ষেত্রে জরায়ু ক্যানসার বা জরায়ু মুখে ক্যানসারের জন্য সাদাস্রাব হতে পারে।
এখন আমরা জেনে নিই বাসায় কি কি উপদেশ মেনে চললে এথেকে সহজেই পরিত্রান লাভ করা সম্ভব।
নিয়মিত পার্সোনাল হাইজিন বা পরিষ্কার পরিছন্নতা মেইনটেইন করতে হবে।
পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য কমক্ষার যুক্ত বা মৃদু সাবান ব্যাবহার করতে হবে।
লিকুইড সুপ গোলো সাধারণত মৃদুক্ষার যুক্ত হয়ে থাকে।
সব সময় ঢিলেঢালা অন্তবাস পড়তে হব।
প্রতিদিন অন্তবাস এবং কাপড় প্রতিদিন পরিস্কার করে ধুয়ে ফপলতে হবে।
মাসিকের সময় স্যানেটারী প্যাড ব্যাবহার করতে হবে।
কাপড় ব্যাবহার করা যাবে না।
এবং একটি নিদিষ্ট সময় পর পর স্যানেটারী প্যাড পরিবর্তন করতে হবে।
মাসিকের রাস্তা পরিস্কার করার জন্য হেক্সিসল সেভলন ডেটল জাতীয় ক্ষতিকর তরল ব্যাবহার করা যাবে না।
প্রতিবার সহবাসের পর এবং প্রসাবের পর জায়গাটি পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
আমাদের সমাজে মেয়েদের সাদাস্রাব নিয়ে কিছু প্রচলিত ভুল ধারনাঃ
অনেকেই মনে করে সাদাস্রাব থাকলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়।আবার অনেকেই মনে করে সাদাস্রাব হলে শরীর শুকুয়ে যায়
অনেকই আমাদের কে বলেন ভিটামিন খেলে কি সাদাস্রাব সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।
আমি বলব এর কোন বৈজ্ঞানিক বিত্তি নেই।
পরিশেষে আমি বলতে চাই আপনার যদি সাদাস্রাব সমস্যা থাকে তাহলে চিন্তিত না হয়ে খেয়াল করবেন
আপনার অস্বাভাবিক সাদাস্রাব লক্ষন আছে কি না?
যদি না থাকে তাহলে এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারন নেই আর অস্বাভাবিক হলে চিকিৎসকের শরানাপন্ন হোন।