ঘুমে নাক ডাকা সমস্যা নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি । আমাদের মুখের ভিতরে যে শক্ত তালু আছে তার পিছনে নরম তালু আছে সে নরম তালু এবং খাদ্যনালীর উপরের যে জায়গাটা যেটাকে ফ্যারিংক্স বলে।
সে ফ্যারিংক্স যে দেয়ালটা আছে যেটা মাংসপেশী দিয়ে তৈরি সেখানে যখন বাধা পেয়ে পেয়ে বাতাস যায়, ধাক্কা খায়।
সেখান থেকেই এই আওয়াজটা তৈরি হয়।
ঘুমে নাক ডাকা নিয়ে নিজে যত না বিব্রত, তার চেয়ে অনেক বেশি অসুবিধেয় পড়েন পাশের বিছানায় যিনি থাকেন।
একজন নিশ্চিন্তে নাক ডাকিয়ে যখন ঘুমান, পাশের মানুষটি তখন ঘুমাতে না পেরে অস্থির হয়ে ছটফট করেন।
নাক ডাকার হাত থেকে মুক্তি পাবেন কীভাবে তা নিয়ে আজকের নিবন্ধ।
নাক ডাকে কাদের :
নাকা ডাকা নিয়ে কলহ কোন নতুন ব্যাপার নয়, বিশেষ করে দাম্পত্য কলহ।
এ নিয়ে বিদেশে বহু বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়েছে, হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে।
কাদের বেশি নাক ডাকে? অবশ্যই পুরুষদের। যাদের চেহারা বেশ নাদুসনুদুস, বয়স ৪০ থেকে ৬০-এর মধ্যে। মেয়েদের কি নাক ডাকেনা?
ডাকে, তবে পুরষদের মতো অমন বাঁটুল দি গ্রেট মার্কা শব্দে নয়। মেয়েদের নাক ডাকে বেশ মিহি সুরেলা শব্দে। বহু পুরুষ সেটা হয়তো পছন্দও করেন।
কীভাবে ডাকে নাক :
নাক কীভাবে ডাকে তা জানার আগে আমাদের শ্বাসপথ নিয়ে একটু জেনে নেওয়া যাক।
নাক বা মুখদিয়ে আমরা যে বাতাস গ্রহন করি তা ফ্যারিংস বা গলবিল হয়ে, ল্যারিংস বা স্বরযন্ত্র হয়ে প্রবেশ করে ট্টাকিয়া বা শ্বাসনালিতে।
ঘুমে নাক ডাকা সমস্যা নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি সেখান থেকে ব্রংকাস বা ক্লোমনালি হয়ে ব্রংকিত্তল বা ক্লোমনালিকা হয়ে পৌঁছায় অ্যালভিওলাস বা ফুসফুসের বায়ুথলিতে। নিঃশ্বাসের সময় বাতাস আবার এই পথেই ফেরে।
আমাদের এই শ্বাসপথের সবচেয়ে কোমল অংশ হল ফ্যারিংস, যার প্রদাহকে আমরা বলি ফ্যারিনজাইটিস মুখ হাঁ করে গলায় আঙ্গুল ঢোকালে যেখানে গিয়ে আমাদের আঙ্গুল ঠেকে এবং ওয়াক ওয়াক করতে থাকি, সেই জায়গাটিই হল ফ্যারিংস।
এটা ওপরের দিকে শেষ হয় নাকের পিছনে বা ন্যাসোফ্যারিংসে গিয়ে, নীচের দিকে স্বরযন্ত্র বা ল্যারিঙ্গোফ্যারিংসে।
স্বাভাবিক অবস্থায় ফ্যারিংসের আকার বেশ সুডোল, অনেকটা জায়গা জুড়ে। কিন্তু ঘুমনোর সময় এর আবার আয়তন ছোট হয়ে যায়।
আমাদের জিভ এ সময় কিছুটা পিছনে অর্থাৎ ফ্যারিংসের দিকে ঝুলে পড়ে তালু-ফ্যারিংস-জিভ ইত্যাদির মাংশপেশি শিথিল হয়ে যাওয়ার জন্য।
ফলে নিঃশ্বাসের সময় ফুসফুস থেকে যে বাতাস শ্বাসপথ ধরে বার হতে থাকে সেটা বাধা মাংশপেশিতে, তন্তুতে। এই কম্পনের ফলে শব্দ সৃষ্টি হয়, আমাদের নাক ডেকে ওঠে।
কেন ডাকে :
নাক ডাকে নাকের অসুখে আবার নাক ছাড়া দেহের অন্যান্য অসুখ বিসুখেও।
নাকের অসুখ: নাকের পার্টিশনের হাড় বাঁকা থাকলে যাকে বলে ডেভিয়েটিড ন্যাজাল সেপ্টাম, নাকে পলিপ বা কোনও টিউমার থাকলে, নাকে অ্যালর্জি, নানা কারণে-নাক বন্ধ থাকলে।
গলার অসুখঃ টনসিল বা নাকের পেছনের অ্যাডিনয়েড গ্ল্যান্ড বৃদ্ধি, ফ্যারিং জাইটিস, তালুর প্যারালাইসিস ল্যারিংসে কিছু অসুখ যেমন সিস্ট, পলিপ প্যারালিসিস ইত্যাদি।
অন্যান্য ঃ অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধুমপান, পান মশলা খৈনি-তবক-গুড়াকুর নেশা, উচ্চ রক্তচাপ, ড্রাগে আসক্তি,
থাইরয়েডের অসুখ, মস্তিস্কের অসুখ, স্নায়ুঘঠিত রোগ, হার্টের অসুখ, ফুস ফুসে গন্ডগোল ইত্যাদি।
কী করবেন :
যাঁদের নাক ডাকে, তারা কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে একেবারেই উদ্বিগ্ন হন না। ডাক্তারের কাছেও যেতে চান না। কেন চান না?
কারন-যাদের নাক ডাকে তাঁরা যে আশাপাশের লোকজনের ঘুমের বারোটা বাজিয়ে ছাড়েন, সেটা তাঁরা জানেন না, জানলেও বুঝতে চান না।
কাজেই ঘুমের বারোটা যাদের বাজে, তাদেরই দায়িত্ব এসে পড়ে ওই ঘুম-ভাঙ্গাঁনিয়াকে ডাক্তারের কাজে নিয়ে যাওয়ার।
এড়াতে হলে : ওজন কমাতে হবে প্রথমেই। কারণ মোটা লোকদের বেশি করে নাক ডাকে, মদ্যপান ছাড়তে হবে।
সম্ভব হলে অন্য নেশাও, মাথায় বালিশ ব্যবহার না করে কয়েকদিন শুয়ে দেখুন, নাক-কান গলা বা শ্বাসপথে কোনও অসুখ থাকলে চিকিৎসা করাবেন,
বিশেষ করে টনসিল, করে টনসিল, অ্যাডিনয়েড ও সাইনাসের অসুখ, থাইরয়েড ও রক্তচাপজর্নিত সমস্যা থাকলে ডাক্তার দেখাবেন।
হোমিওপ্যাথিক পরামর্শ :
ঘুমে নাক ডাকা সমস্যা সমাধানে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা- পদ্ধতিতে রোগীর আমূল পরিবর্তণ ও আরোগ্য সাধন করে, যা অন্যপ্যাথিতে নেই।
কেন্ট মেটেরিয়া মেডিকায় (১) কেলকেরিয়া কাব, ও (২) ও পিয়াম আপনার নাক ডাকাকে গুডবাই জানালেও চিকিৎসক এর পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে। না হলে হিতে বিপরীত হয়।
ঘুমে নাক ডাকা সমস্যা নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি
অনেকে মনে করেন নাক ডাকার আবার কোন চিকিৎসা হয় নাকি?
জ্বি হ্যা হোমিওপ্যাথিতেই এর সমাধান রয়েছে কারন হোমিওপ্যাথি হচ্ছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত প্রাকৃতিক আরোগ্য পদ্ধতি।
আপনার শারিরীক বা মানসিক যেকোন বিকৃতিই হোকনা কেন, লক্ষণভিত্তিক ঔষধ তা নির্মূল করবে।
এই ধরনের সমস্যায় কয়েকটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ যেমন ঃ ওপিয়াম, নাক্স ভমিকা, চায়না, স্ট্রামোনিয়াম, সাইলিশিয়া।