হুপিং কাশি কি?
রোগ বিবরন : ইহা এক বিচিত্র ধরনের কাশি। কাশিবার সময় হুপ হুপ শব্দ হয় বলিয়া ইহার নাম দেওয়া হইয়াছে। হুপিং কাশি।
ইহা শিশুদের মধ্যে অধিক হইতে দেখা যায়। কাশিতে কাশিতে দম বন্ধ হইবার উপক্রম হয়।
মুখ, চোখ লাল হইয়া যায়। বমি করিয়া ফেলে, রাত্রে কাশির বৃদ্ধি। দুই তিন সপ্তাহ হইতে দুই তিন মাস পর্যন্ত ইহা ভোগ করিতে দেখা যায়।
তবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার সহজে আরোগ্য হয়।
হুপিং কাশির চিকিৎসা
স্পনজিয়া(Spongia) : কুকুরের আওয়াজের মতো ঢং ঢং শব্দ করে কাশি।
আর্নিকা মন্ট (Arnica Mont) : কাশির ঝোঁক আসিবার পূর্বে শিশু কাঁদে, কিংবা শিশু রাখিলেই কাশির ঝোঁক আসে। কাশিতে কাশিতে মুখ নাক দিয়া ফেনা যুক্ত চাপ চাপ রক্ত উঠে।
চোখে রক্ত জমিয়া যায়। প্রভূতি লক্ষনে আর্নিকা মন্ট ফলপ্রদ।
সিনা (Cina) : কৃমিগ্রন্থ শিশুদের হুপিং কাশি, রুক্ষ মেজাজ, জিহ্বা পরিস্কার, ঘুমের ঘোরে দাঁত কাটে, কাশিতে কাশিতে শরীর শক্ত হইয়া যায়। গলায় ঘড় শব্দ করে।
জাষ্টিসিয়া (Justicia) : শিশুদের হুপিং কাশির শ্রেষ্ঠ ঔষধ। কাশিতে কাশিতে দম বন্ধ হইয়া যাইতে চায়। বমি করিয়া ফেলে।
ক্যাসিয়া সোপেরা (Cassia Sophera) : সর্ব প্রকার হুপিং কাশির মহৎ কার্যকারী ঔষধ।
ইপিকাক (Ipecac) : কাশিতে কাশিতে শরীর নীল বর্ণ হইয়া যায়। কাশির শেষে শিশু নিঃশ্চুপ হইয়া পড়ে। কাশির সহিত বমি বা বমির ভাব বেশী, গা বমি বমি।
মাঝে মাঝে নাক দিয়া রক্ত পড়ে। ইহাতে ইপিকাক ফলপ্রদ।
কুপ্রাম মেট (Cuprum Met) : কাশিতে কাশিতে হাতে পায়ে খিল ধরে। চক্ষু উল্টাইয়া যায়, মরার মত পড়িয়া থাকে। ঠান্ডা জল পান করিলে কাশির উপশমে এই ঔষধ উপকারী।
ড্রসেরা ও বেলেডোনা (Drosera Belladona) : হুপিং কাশিতে এই দুটি ঔষধ পর্যায়ক্রমে সেবন করিতে দিয়া আমি বহু রোগী আরোগ্য হইতে দেখিয়াছি।
ড্রসেরা 1x ও বেলেডোনা 1x তিন চার ফোঁটা মাত্রায় সামান্য জলের সহিত দিনে ৪-৬ বার সেবন করিতে হয়।
এই দূরারোগ্য কাশি সম্পূর্ণ আরোগ্য হইতে প্রায়ই বিলম্ব হয়।
পথ্য ও আনুষাঙ্গিক ব্যবস্থা
বুকে পিঠে সরিষার তৈল গরম করিয়া মালিশ করা ভাল। অধিক ঠান্ডা লাগানো উচিত নয়। লঘু ও পুষ্টিকর খাবার দেওয়া উচিত।